*যোধপুর পার্ক শারদীয়া উৎসব কমিটি র এবারের ভাবনা পূর্নজন্ম*

আজকাল পরশুর গল্প নয়, থাকবো চিরকাল, মানুষ হয়ে মানুষেরই মাঝে। না, চিরকাল মানে আমৃত্যু নয়; মৃত্যুর পরেও। পুনর্জন্ম বা জন্মান্তরবাদ এর বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ঊর্ধ্বেও আছে, মানুষের আরেকটি জীবন। বিবেকানন্দের কথায় আমাদের সেরা কীর্তিগুলো পরের পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার আগে একটা দাগ রেখে যেতেই হবে । প্রজন্মকে চিনিয়ে দিয়ে বলবে, আমরা কে ছিলাম। কি করে গিয়েছি আমরা? মনীষীদের শ্রেষ্ঠ কীর্তি লেখা রয় যুগে যুগে। কিন্তু 
আমরা? আমাদের বিশ্বাস, আমাদের অলীক কল্পনা – এ জন্মে যা পাইনি, তা নিশ্চই পাবো পরজন্মে। যদিও আমরা জানি "জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে, চিরস্থির কবে নীর, হায়রে জীবন নদে?” সৃষ্টিকর্তা এই মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন সবুজ শ্যামলে। সুন্দর করে সাজিয়েছেন পৃথিবী। যেখানে সেরা সৃষ্টি হলাম আমরা, মানব জাতি। পেয়েছি জীবন, কিন্তু বড় ক্ষণস্থায়ী। এ জীবনের আয়ু অনন্তকালের নয়। আমাদের জীবন নশ্বর। জীবনের শুরু হয় জন্ম দিয়ে, আর পরিসমাপ্তি ঘটে মৃত্যুর মাধ্যমে। মানুষের পচনশীল শরীর মৃত্যুর পর ধীরে ধীরে মিশে যায়, পৃথিবীর মাটিতে। মানুষ হয়তো অন্যের স্মৃতিতে বেঁচে থাকতে পারে। সৃষ্টিকর্তা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে মানুষকে পাঠিয়েছেন এ পৃথিবীতে। মানুষ চিরদিনের মত পৃথিবী ছেড়ে যায় চলে। শুধু অমর থেকে যায় তার সৃষ্টিকর্ম। "ধরায় যখন দাওনা ধরা, হৃদয় তখন তোমায় ভরা, এখন তোমার আপন আলোয়, তোমায় চাহি রে।” পৃথিবীর আলো, রঙ, রূপ, আমাদের সামনে সুস্পষ্টরূপে দৃশ্যায়িত করার জন্য, যে অঙ্গটি সবচেয়ে জরুরী, সেটি হলো 'চোখ'। দৃষ্টিহীনদের অন্ধকারের কথা, দৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের অনুভবের বাইরে। আর সেটাই স্বাভাবিক। তবু আমরা তো ভেবে দেখতে পারি? দৃষ্টিহীনরা অন্ধত্বকে, ঈশ্বরের অভিশাপ বা ভাগ্যের লিখন বলেই এতকাল মেনে নিয়েছেন। সেই ভ্রান্ত ধারণা আজ বদলেছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির মাধ্যমে বহু ধরনের অন্ধত্ব রোধ করা আজ সম্ভব। মৃত্যুর পর নিজের চোখ অন্যকে দানের মাধ্যমে, চাইলেই বেঁচে থাকা যায়, পৃথিবীর আলো রঙের মাঝে। আমাদের দেশে ৪০ মিলিয়ন মানুষ একেবারে অন্ধ বা আংশিক অন্ধ (Blind ) এমনটাই জানাচ্ছেন সমীক্ষকদের একাংশ। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (WHO)-র তথ্য অনুযায়ী এই ৪০ মিলিয়ন মানুষের মধ্যে, প্রায় ১.৬ মিলিয়ন শিশুও রয়েছে। মৃত্যুর পর যাতে চোখ দুটি অন্য কোনো মানুষের কাজে লাগতে পারে, সেই ভেবেই মরণোত্তর চক্ষুদান করে যান বহু মানুষ। কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মানুষের অন্ধত্ব মোচন অনেকটাই সম্ভব। চক্ষুদাতা অমর হয়ে থাকেন, অন্যের চোখে। মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকে তার দৃষ্টি। “আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে।” জাগতিক নিয়মে আমরা ক্ষণস্থায়ী হলেও, অন্তর থেকে আমরা প্রায় সবাই, ফিরে আসতে চাই এই ধরিত্রির বুকে। “আবার আসিব ফিরে, ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায়। আসুন আমরা মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। পুনর্জন্ম হোক দু চোখের আলোয়।

জানালেন *সুমন্ত রায়*
*সাধারণ সম্পাদক*
*যোধপুর পার্ক শারদীয়া *উৎসব কমিটি*

Comments

Popular posts from this blog

A new flight for healthcare in Kolkata, Aastik Healthcare to offer e-clinics and online pharmacy alongside physical counterparts

পূর্ব রেলওয়ে / শিয়ালদহশিয়ালদহ বিভাগের টিকিট পরীক্ষকদের জন্য বিশেষ পরিচয় ব্যাজ চালু

জাপান ক্যারাটে ইন্ডিয়ার বার্ষিক গ্রেটেশন এক্সামিনেশন