অভিনেতা সোহেল দত্ত-র উদ্যোগে ওয়েব সিরিজে আসছে ব্যারাকপুর

অদ্বৈত ঘোষ:-পুজোর ঠিক পরেই ইয়োলো বার্ড এন্টারটেইনমেন্ট  এর ব্যানারে তৈরি হচ্ছে এই প্রথমবার ব্যারাকপুরকে‌ নিয়ে ওয়েব সিরিজ। ছবিটি প্রযোজনা করছেন অভিনেতা সোহেল  দত্ত। তিনি ব্যারাকপুর এর ভূমিপুত্র। এই ছবিতে রয়েছে আরো বড় চমক। সেটা হলো ব্যারাকপুর নিয়ে যিনি শেষ কথা বলেন, যাকে নিয়ে নানা বিতর্কিত, নানা মন্তব্য,
ভালো মন্দ মিলিয়ে নানা মানুষ নানা কথা বলেন সেই সংসদ অর্জুন সিং। তিনিও এখানকার ভূমিপুত্র। তাঁর পরিবার ১৩০ বছর ধরে এই ব্যারাকপুরের বাসিন্দা। 

সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার ললিত গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই নতুন ওয়েব সিরিজ ব্যারাকপুর নিয়ে এক সাংবাদিক সন্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন অর্জুন সিং ও সোহেল দত্ত। প্রথমে সোহেল জানান, আমি ব্যারাকপুর অঞ্চলে বহু দিন আছি। এই জায়গার একটা বিরাট ইতিহাস আছে। অনেক মানুষ বলেন, ব্যারাকপুর খুব খারাপ জায়গা, কেউ আবার এর জন্য অর্জুন সিং কে দায়ী করেন।
আমি সেটা বিশ্বাস করি না, এই ছবির একটা পার্ট হবে অর্জুন সিং। আমি, অর্জুন সিং ছাড়া আরো একজন বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তি এই ছবিতে থাকবেন। মোটকথা ব্যারাকপুর অঞ্চল এর নানা দিক নিয়ে এই ওয়েব সিরিজটি তৈরি হবে আট থেকে দশটি এপিসোডে। পুজোর পর শুটিং শুরু হবে। তখন আরো বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে। কারা অভিনয় করছেন। কে কি করছেন। 
এই সাংবাদিক সন্মেলনে অর্জুন সিং বলেন, 'আমি সোহেলকে জন্ম থেকেই চিনি ও জানি। ওর বাবা আমার বন্ধু। খুব ভালো লাগছে সোহেল ব্যারাকপুর  নিয়ে ওয়েব সিরিজ করছে। আমি ওকে এই ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা করবো। পুরো ছবিটা শুটিং হবে ব্যারাকপুর এর বিভিন্ন জায়গায়। ব্যারাকপুর আসলে কি জায়গা, কি অবস্থা, কি হয় এখানে, কারা এখানে থাকেন, সব মিলিয়ে এই ব্যারাকপুরের চরিত্রটা দেখানো হবে। সত্যিটা প্রকাশ পাবে। আসল সত্যটা উদঘাটন হোক এটাই আমি মনে প্রাণে চাই। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি হলেও যা বলি স্পষ্ট বলি। সোজা কথা সহজ ভাবে বলি। আমি এখানে প্রাকটিকাল আটিস্ট। এর আগে এই কাজ কেউ করেননি। আমি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সোহেল দত্ত খুব ভালো অভিনেতা। ও আগে ক্লাস রুম, এছাড়া ক্যানিং এর মিনু, শ্রীময়ীতে অভিনয় করেছে। আমি আশাবাদী ও ব্যারাকপুরের অতীত ও বর্তমানকে তুলে ধরে এই ছবিতে অন্য মাত্রা দেবে।'

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের  ৩২ তম জন্মবহুল শহর এই ব্যারাকপুর। প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের বাস । গঙ্গা তীরবর্তী শহরটি ১৮৫৭-র সিপাহী বিদ্রোহ  বা ভারতীয় জাতীয় মহা বিদ্রোহের কারণে বিখ্যাত। বিপ্লবী মঙ্গল পান্ডে ছিলেন প্রথম প্রতিবাদী, যিনি ব্যারাকপুর থেকে ঔপনিবেশিক  ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন।
 এই ব্যারাকপুরে আছে গান্ধীঘাট, গান্ধী মিউজিয়াম, আদ্যাপীঠ মন্দির, লাটবাগান, প্রেমচাঁদ শতবার্ষিকী ভবন। এখানেই উনিশ শতকে এশিয়ার প্রথম চিড়িয়াখানা তৈরি হয় । ১৮০০ সালে গঙ্গার তীরে তৈরি বিলেতি ধাঁচে এক বাহারি উদ্যান, ব্যারাকপুর পার্ক । যারা আয়তন ১৬০০ বিঘা।

 ব্যারাকপুর বহু সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রিয় স্থান । রাজনীতিবিদ ও দেশনেতা রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বহুদিন এই ব্যারাকপুরে ছিলেন । তিনি যে বাড়িটিতে ছিলেন সেখানে এখন নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। একই জায়গায় তাঁর নামে একটি মহাবিদ্যালয় তৈরি হয়েছে । সব মিলিয়ে ব্যারাকপুর ব্যারাকপুরেই থাকলেও ব্যারাকপুরের পরিচিতি আজ দেশজোড়া।

Comments

Popular posts from this blog

A new flight for healthcare in Kolkata, Aastik Healthcare to offer e-clinics and online pharmacy alongside physical counterparts

পূর্ব রেলওয়ে / শিয়ালদহশিয়ালদহ বিভাগের টিকিট পরীক্ষকদের জন্য বিশেষ পরিচয় ব্যাজ চালু

জাপান ক্যারাটে ইন্ডিয়ার বার্ষিক গ্রেটেশন এক্সামিনেশন